সিলেটের সাথে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
অনলাইন ডেস্ক নিউজ।।
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, সদর ও রাজনগর উপজেলায় ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ৪ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়াও জেলায় সব নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে নতুন নতুন আরও এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
বড়লেখা ও কুলাউড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির বেশ অবনতি হওয়ায় গ্রামগুলোতে এখন বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছে বিদুৎ অফিস। তবে ঘরে বাড়ি পানি ওঠায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজে আশ্রয় নিয়েছে বেশ কয়েকশ পরিবার।
প্রয়োজনের তুলনায় বর্তমানে ত্রাণসামগ্রী একেবারেই কম। বড়লেখা উপজেলায় কুশিয়ারা নদী ও হাকালুকি হাওরের পানি বেড়েছে। ফলে ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ২০০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে।
এদিকে কুলাউড়া উপজেলায় অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নদ-নদীসহ হাকালুকি হাওরের পানি বাড়ায় ভুকশিমইল, ভাটেরা, জয়চন্ডি, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর, ও কুলাউড়া সদরসহ মোট ১৩টি ইউনিয়ন শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলোর সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন।
এ ছাড়াও জুড়ী উপজেলার ৩টি, সদর উপজেলার ৬টি এবং রাজনগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। নদী ও হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার হাওরাঞ্চল ও কুশিয়ারা নদীর দুই পারের মানুষ বেশ বিপাকে পড়েছেন। এরই মধ্যে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ওয়াপদা বেড়িবাঁধের উত্তর পাশে কুশিয়ারা নদীর তীরের রামপুর, সুরিখালসহ প্রায় ২০টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
মৌলভীবাজার সদরের চাঁদনীঘাট ও কনকপুর ইউনিয়নের মনু নদী পাড়ের প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গত রাতে এসব ঘরে পানি প্রবেশ করে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শিশু, বৃদ্ধ, নারী সবাই পার্শ্ববর্তী মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে মধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন।
রাতের মধ্যে সব লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। এদিকে বন্যা আক্রান্তদের জন্য এখনো কোনো ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়নি।
এবিষয়ে রাজনগরের উত্তরভাগ ইউনিয়নের সাবেক এক মেম্বার বলেন যে, গত ৩ দিন ধরে আমরা পানিবন্দি। গ্রামের রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে, এতে স্বাভাবিক যোগাযোগ অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে। সিলেট সুনামগঞ্জের বন্যার কারণে আমাদের দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না।
উত্তরভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন যে, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। আমরা বন্যার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি। যে পরিমাণ ত্রাণ বরাদ্ধ হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
মৌলভীবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জনান যে, নদীর পানি বাড়ছে। একদম বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক জানান যে, জেলাজুড়ে বন্যায় আক্রান্ত প্রায় তিন লাখ মানুষ। বানভাসি মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে।