কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার জসমতপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধলাই নদী থেকে অবৈধভাবে নিয়মবহির্ভূত বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদীভাঙনের কবল থেকে বসতবাড়ি ও কৃষি জমি রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ভুক্তভোগীরা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জসমতপুর এলাকায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয় জসমতপুর, দক্ষিণ ধর্মপুর, পাথরটিলা ও কালাছড়া গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ।
সমাজসেবক আয়ুব আলীর সভাপতিত্বে এবং নজরুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ী কামাল মিয়া, আব্দুর রউফ, আজাদ মিয়া, নাসির মিয়া, আমির আলী, তাহির মিয়া, জুয়েল মিয়া, হৃদয় মিয়া প্রমুখ।
সড়জমিনে গেলে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের জসমতপুরসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ধলাই নদী থেকে অবৈধভাবে ইজারা ছাড়াই বালু উত্তোলন করছে কিছু প্রভাবশালী মহল। তার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে স্থানীয় ৩ গ্রামের ৫ শতাধিক মানুষ। মানববন্ধন শেষে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা, কৃষি জমি রক্ষার জন্য দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধের জোর দাবি জানিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, ‘প্রভাবশালী ইজারাদারের লোকজন নিয়মবহির্ভূতভাবে জসমতপুর মৌজায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশ থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করছেন। এতে নদীতীরবর্তী হাটবাজার, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শিগগিরই বালু তোলা বন্ধ করা না হলে আগামী বর্ষায় নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ করার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।’
মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ধলাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীতীর রক্ষা বাঁধ, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ধলাই নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে আবাদি জমি, নদীতীর রক্ষা বাঁধ, ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এই এলাকার শিপার আহমেদ তরফদার, জয়নু চৌধুরী, শিবলু খানঁ, রকি, সুয়েব মিয়া ও ইসমাইল মিয়া এখান থেকে বালু উত্তোলন করছেন। তারা আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলবে। আমরা নিরাপত্তায় ভুগছি।’
অধৈভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগের বিষয়ে ব্যবসায়ী সুয়েব মিয়া ও ইসমাইল মিয়া বলেন, ‘আমাদের বিষয়ে তারা যে বক্তব্য দিয়েছে সব মিথ্যা। আমার বালুর সাথে জড়িত না ও কাউকে হুমকি দেইনি।
আরেক অভিযুক্ত শিপার আহমেদ তরফদার বলেন, ‘বালু উত্তোলনের জায়গাটা আমার। আমি বালি ব্যবসার সাথে জড়িত না। জায়গার টাকাটা শুধু তারা আমাদের দেয়।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাখন চন্দ্র সুত্রধর বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ করা হয়েছে। আমরা ৩টা ড্রেজার মেশিন তুলে নিয়ে এসেছি। তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’