কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
কমলগঞ্জে নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন সৈয়দ জামাল হোসেন
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা থাকতে চান না জেলা-উপজেলা শহর কিংবা গ্রামে, আবার যে কজন থাকেন তাদের সেবা পেতে বেশি টাকা ভিজিট দিয়ে সিরিয়াল নিয়ে অপেক্ষা করতে হয় অনেকদিন পর্যন্ত। বেশি টাকায় বড় শহর ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেখা না পাওয়া আমাদের দেশে খুব স্বাভাবিক বিষয়।
কিন্তু ব্যতিক্রমী একজন চিকিৎসকের খোঁজ মিলেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে। যিনি নিজ এলাকায় নিরবে সেবা দিচ্ছেন বিগত ২৬ বছর ধরে। তিনি সাবেক সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। নাম তার ডা. এন.কে.সিনহা।
২৬ বছর ধরে প্রতি বছর পূজার ছুটিতে এসে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের তিলকপুরের গ্রামের বাড়িতে বিনামূল্যে এলাকার দরিদ্র রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র প্রদান করছেন। এ বছর ব্যবস্থাপত্রের সঙ্গে বিনামূল্যে ঔষধপত্রও দিইয়েছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, এ বছর দুর্গাপূজার ছুটিতে আসার পর ডা. এন.কে. সিনহা গত বুধবার সকাল ৯টা থেকে নিজ বাড়িতে বিনামূল্যে রোগী দেখছেন। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ২০০ জন রোগী দেখে বিনামূল্যে ঔষধপত্র প্রদান করছেন তিনি।
শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত একইভাবে রোগী দেখবেন বলে জানান তিনি। তিনি জানান, এ সময়ে প্রায় ৬ শতাধিক রোগী দেখে বিনামূল্যে ঔষধপত্র প্রদান করা হবে।
গ্রামের মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মহতি উদ্যোগ এলাকার লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের জন্য নারী, শিশুসহ শতাধিক রোগী বাড়ির উঠানে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
চিকিৎসা নিতে আসা কমলগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপিত এমএওয়াহিদ রুলু ও মোমিন ইসলাম ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইয়াসিন চৌধুরী বলেন, ‘বিনামূল্যে সময় নিয়ে নাক, কান ও গলা পরীক্ষা করে প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন এবং ঔষধপত্রও দিয়েছেন। আমাদের মতো গরীব লোকেরা এতে খুবই উপকৃত হচ্ছি। সিলেট গিয়ে দেখাইলে অনেক টাকা লাগতো, কিন্তু এখন আর সেখানে গিয়ে দেখাতে লাগে না। ডাক্তার সাবের বাড়িতে দেখাই, তাও ফ্রীতে।’
নিজ বাড়িতে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের বিষয়ে ডা. এন কে সিনহা বলেন, ‘বিগত ২৬ বছর যাবত আমি এলাকার মানুষদের মধ্যে এ সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এ বছর বিনামূল্যে ঔষধও ফ্রি দিচ্ছি। এতে এলাকার দরিদ্র মানুষজন কিছুটা হলেও উপকৃত হচ্ছেন এবং মানুষের সেবা দিতে পারায় নিজেরও ভালো লাগছে। এছাড়াও বাড়িতে আসলে আমি বিনামূল্যে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি। এ বছর টানা ৬দিন রোগী দেখব।’
এছাড়াও তিনি বলেন, রোগীদের জন্য আমি একটি ঘর নির্মান করে দিয়েছি। অনেক সময় সেখানে জায়গা হয়না সেজন্য আলাদা করে বাসার আঙ্গীনায় একটি অস্থায়ী সেড নির্মান করে রোগীদের বসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। রোগীরা যেন আমার সময় সেবাটা পায় সেই ব্যবস্থা আমি করে রাখছি।