কমলগঞ্জ প্রতিনিধি::
ইসরায়েলের হামলায় আল-শিফা হাসপাতালে রোগী মারা গেছে
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন সহকারী শিক্ষক বিদেশ চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তাই শিক্ষকের অভাবে পাঠদানের অসুবিধা হচ্ছে প্রতিষ্ঠান গুলোতে।
বিদেশ যাওয়া ৪ জন সহকারী শিক্ষক হলেন, উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসরাত জাহান, মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাবিবুর রহমান, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ মোরশেদুল ইসলাম ও সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন।
এবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগন। তাদের মধ্যে মুর্শেদা খাতুন কোথায় গেছেন জানা যায় নি। বাকি ৩ জন যুক্তরাজ্য অবস্থান করছেন।
তবে অনুসন্ধানে জানা যায় যে, মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহান চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়ে ৩রা অক্টোবর থেকে আর স্কুলে আসেননি। পরে জানাযায় তিনি যুক্তরাজ্য চলে গেছেন। মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাবিবুর রহমান গত ২২শে জানুয়ারী স্কুলে যোগাদান করে মাত্র ১ দিন ক্লাস করান এর পর ২৩শে জানুয়ারি থেকে আর স্কুলে আসেননি। বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ মোরশেদুল ইসলাম সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ থেকে বিদ্যালয়ে আর উপস্থিত হননি। পরে জানা যায় যে, এই তিনজন যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন।
তবে চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন ১২ই অক্টোবরের ৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়েছেন ২ মাস এরপর আর বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি। তিনি কোন দেশে গেছেন জানা যায়নি।
মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস খান, মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন মিয়া, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিয়া বেগম ও চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন যে, তারা কেউ আমাদেরকে কিছু বলেনিনি।
কেউ ছুটি কাটিয়ে আর আসেননি আবার কেউ কিছু না বলেই বিদ্যালয় থেকে চলে গেছেন। পরবর্তীতে লোকমুখে শুনেছি তারা বিদেশে চলে গেছেন। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর আমরা সাথে সাথে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চিটি দিয়েছি। তাদের পরিবর্তে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষক সংকট থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে তারা জানান।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, হাবিবুর রহমান, ইসরাত জাহান, মোরশেদুল ইসলাম স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। আর মুর্শেদা খাতুন কোথায় গেছেন জানা যায় নি। আবার দেশে এসে শিক্ষকতায় যোগদান করবেন কি না পরিবারের সদস্যরা জানেন না।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার কয়েকজন সহকারী শিক্ষক জানান যে, চিকিৎসার কথা বলে অনেকেই ২ মাস ছুটি কাটান। আসলে এই দুইমাস তারা বিভিন্নভাবে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য প্রসেসিং করেন। হঠাৎ এভাবে যাওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি তাদের। বাচ্চাদের কথা ও দেশের কথা চিন্তা না করে এভাবে নিজের স্বার্থের জন্য চলে গেলেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন যে, যারা ছুটি কাটিয়ে স্কুলে আসেননি বা না জানিয়ে কোথাও চলে গেছেন তাদেরকে আমরা নোটিশ পাঠিয়েছি। বিদেশে যাওয়ার কোন অনুমতি নেই। তিনি আরও বলেন যে, যারা বিদেশ গিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা অলরেডি হয়ে গেছে। আমরা কাউকে এসব বিষয়ে ছাড় দেই না।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ খোরশেদ আলম বলেন যে, এ রকম ঘটনা গুলো শুধু এ অঞ্চলে হচ্ছে যা কখনও ভাবা যায়না। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। যারা এভাবে না বলে চলে গেছে তারা এ কাজটি ঠিক করেনি। চাকুরী থেকে সেচ্ছায় অভ্যাহতি নিয়ে চলে যেতো পারতো। যারা দুই মাসের অধিক ছুটি কাটিয়ে বিদ্যালয়ে আসেনি আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।