অনলাইন ডেস্ক নিউজ ::
খুলনার মানুষের প্রাণের দাবি শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি অবশেষে স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে আরো একধাপ এগিয়ে গেলো।
বলিউড কাঁপানো অসংখ্য নায়িকা ভারতে জন্ম নয়
অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনা ও বাধা অতিক্রম করে অবশেষে পঞ্চাশ একর জমিতে নির্মিত হতে যাচ্ছে খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য অনুমোদন বিল পাস ও জমি অধিগ্রহণের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম নিষ্পত্তির মাধ্যমে প্রশাসনিক অনুমোদন করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম।বিশ্ববিদ্যালয় টি বাস্তবায়িত হওয়ার কারণে স্বাস্থ্য চিকিৎসা ক্ষেত্রে উপকৃত হবে খুলনা অঞ্চলের প্রায় দুই কোটি মানুষ।
তাছাড়া মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিয়ে অগ্রযাত্রা শুরু করবে খুলনা তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
এতে ব্যয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। এবং মেয়াদকাল ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলাধীন এলাকার পঞ্চাশ একর জমির উপর ৯৬০ শয্যা হাসপাতাল চালু হতে যাচ্ছে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটির সূত্রে জানা যায় যে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে প্রায় গত এক বছর যাবৎ জটিলতার মধ্যে থাকার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু হতে বিলম্ব হয়েছে।
অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনাও জটিলতা কেটে আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একক সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত পঞ্চাশ একর জমি অধিগ্রহণের পরেই অবকাঠামো নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মেহেদী নেওয়াজ।
তবে এবিষয়ে জানায় যে, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে ইতিমধ্য সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নার্সিং ইনস্টিটিউট ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে অভিভুক্ত করা হয়েছে। (২০২১- ২২)ইং সালের শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। এলক্ষ্যে ডিন শিক্ষক সহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ইতিমধ্য।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মোঃ মফিজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে জমী অধিগ্রহণের জন্য ৪৫৬ কোটি ২ লাখ ২৩ হাজার ১৮৪ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে জমি অধিগ্রহণের পরেই শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল।
এবিষয়ে আরও জানা যায় যে, খুলনার একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল খুলনাবাসী। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুলনা সফরের আগে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানানো হয়। পরে ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক বর্তমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ( উন্নয়ন অধি শাখা এবং নিজ দায়িত্বে অতিরিক্ত দায়িত্ব ক্রয়-ও সংগ্রহ অধি শাখা ) মোহাম্মদ হেলাল আহমেদ। পরে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ও এর যৌক্তিকতা তুলে ধরেন তিনি। যার প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর খুলনায় একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়ে সম্মতি দেন প্রধানমন্ত্রী।
২০২০ সালের ১৩ই জুলাই মন্ত্রিসভায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন খুলনা ২০২০ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পরের বছর ২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি বিলটি সংসদে পাস হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। চলতি বছর ৩রা মে তিনি উপাচার্য পদে যোগদান করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম খুলনা নিরালা আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া করা ভবনে শুরু হয় প্রশাসনিক কার্যালয়।
তবে সেখানে আলাদা কয়েকটি কক্ষে চলে প্রশাসনিক কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ৭ মাস পর শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা সম্ভাবনা তার সমীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রকল্প পরিচালকের উপ পরিকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মেহেদী নেওয়াজকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক উপ পরকল্প পরিচালক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্টার মোঃ নূরুল মোমেন কে। বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রকল্প পরিচালক ও খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাক্তার মেহেদী নেওয়া বলেন খুলনা মঙ্গলা রেললাইন সংলগ্ন মাথা ভাঙ্গা মৌজায় প্রাথমিকভাবে জমি বাছাই করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য সেখানে ১০০ একর জমি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রহণের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনুমোদন এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে।
তবে জমি অধিগ্রহণের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন কৃষি জমি ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকায় পঞ্চাশ একর জমি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রণালয়।
তবে সংশ্লিষ্ট স্থানে মাটির গুণগত মানের কারণে ওই স্থানে ৬ তলা অধিক উচ্চতর ভবন নির্মাণ ঝুঁকিপূর্ণ সয়েল টেস্টিং রিপোর্ট পাওয়া গেছে। নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ ৬ তলা করে প্রতিটি ভবন নির্মাণ করা এবং ময়ূর খালকে সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের দৃষ্টিনন্দন জলধার সৃষ্টি করার জন্য কমপক্ষে ৭০ একর জমি বরাদ্দর প্রয়োজন।
তিনি আরোও বলেন যে, উচু ভবন করা না গেলে ভবনের পরিমাণ বাড়াতে হবে তখন জমি প্রয়োজন বেশি হবে। কিন্তু উঁচু ভবন করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যকর সম্পূর্ণ করা গেলে সেখানে বহুতল ভবন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন। প্রকৌশলী তাদের নির্দেশনা মেনে সেখানে বহুতল ভবনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ফলে বহুতল ভবন নির্মাণ করা গেলে নির্ধারিত পঞ্চাশ একরেই পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস করা সম্ভব হবে।