চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে পরিদর্শনের ছয় মাসের মধ্যে আগুন
অনলাইন ডেস্ক নিউজঃঃ
চট্টগ্রামের মিরসরাই ট্রেন আসতেছিল, ড্রাইভার খেয়াল করে নাই। ব্যারিকেডও ছিল না। রেল লাইনে ওঠার সঙ্গে ট্রেন এসে আমাদেরকে ধাক্কা মারি দিছে। তারপর আমি পড়ি গেছি। পেছনে আমরা যারা বসছি, যেখানে ট্রেন মারছে সেখানেই পড়ে গেছি। মাইক্রোটাকে নিয়ে ট্রেন সামনে চলে যায়।
তবে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া এলাকায় ট্রেন ও মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়ায় ইমন এভাবেই শ্বাসরুদ্ধকর বর্ণনা দিচ্ছিলেন। সে দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসের পেছনে থাকায় প্রাণে বেঁচে গেলেন।
সে পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন ইমন
ইমন দাবি করে যে, রেল লাইনে কোনো ব্যারিকেড ছিল না, ছিল না কোনো বাঁশ। গেটকিপারও ছিলেন না দাবি করে বলে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে গেটকিপারের বিচারও চাইল সে।
ইমন জানায় মাইক্রোবাসটিতে মোট ১৮ জন যাত্রী ছিলেন।
ইমন আরও বলেন যে, ওই সময় কোনো লোকজনই ছিল না। দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, আমার বন্ধুরা চলে গেছে, স্যারও চলে গেছে। আমি এর বিচার চাই, গেটম্যানের বিচার চাই।
দুর্ঘটনাটি ঘটে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া এলাকায়। পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের ঝরনা থেকে কিছুটা দূরেই ছিল রেলের লেভেলক্রসিং। রেললাইনে ট্রেন আসছিল কিনা তা জানা ছিল না তাঁদের কারোই।
এদিকে নিহত ১১ জনের মধ্যে ৯ জনের পরিচয় মিলেছে। তারা সবাই হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজার এলাকার ‘আর এ- জে’ নামক একটি কোচিং সেন্টারের ছাত্র শিক্ষক। নিহতরা হলেন- কোচিং সেন্টারের চার শিক্ষক জিসান, সজীব, রাকিব এবং রেদোওয়ান। এ ছাড়াও কেএস নজুমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম, আয়াত, মারুফ, তাসফির ও হাসান।
আহত ৬ জন হলেন- মাইক্রোবাসের হেলপার তৌকিদ ইবনে শাওন (২০), একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মাহিম (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো. ইমন (১৯), এসএসসি পরীক্ষার্থী তছমির পাবেল (১৬) ও মো. সৈকত (১৮)।
জানা যায় যে, নিহত ও আহত সকলের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজার খন্দকিয়ায়। আজ শুক্রবার এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং সেন্টারের চার শিক্ষক জিসান, সজীব, রাকিব এবং রেদোয়ান মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া পানির ঝরনা দেখতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দুপুরে ট্রেনের ধাক্কায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহিদুল আলম বলেন, ‘আর এ-জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও ছাত্ররা সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। গাড়িতে কোচিং সেন্টারের ৪ জন শিক্ষক ছিল। বাকিরা শিক্ষার্থী। ’
তবে নিহত এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশামের বন্ধু সাজিদ বলেন যে, আমারও ওদের সঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজকে এলাকায় একটা ফুটবল টুর্নামেন্ট থাকায় আমি আর যাই নাই। আমি আমার বন্ধুদের হারিয়ে ফেললাম। আর ওদের দেখতে পাব না কোনদিন এ বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সে।
তবে মাইক্রোবাস চালকের ভুলে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি জানান যে, আমাদের রেলওয়ের নিযুক্ত গেটম্যানও ছিল সেখানে। এই ঘটনার পরপর গেটকিপারের সঙ্গে কথা বলেছি। গেটকিপার জানায় যে, মাইক্রোবাসের চালক গেটবারটি জোর করে তুলে রেললাইনে ঢুকে পড়ে। এরপর মহানগর প্রভাতী ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়।