শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি।।
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২২ এর কলেজ পর্যায়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজ শ্রীমঙ্গল-এর সহকারী অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী।
এ উপলক্ষে ১৯শে মে বিকেলে স্থানীয় ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এবং উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন। সহকারী অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী এবং উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সঞ্জিত কুমার দাশ-এর সঞ্চালনায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকারীদের হাতে সনদ এবং ক্রেস্ট ও পুরস্কার হিসেবে বই তোলে দেন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম, সাতগাঁও সামাদিয়া আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোল্লা শাহিদ আহমেদ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ কুমার বর্ধন, বর্ডার গার্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিশি কান্ত দেব প্রমুখ। এসময় মাধ্যমিক বিদ্যালয় , কলেজ এবং মাদ্রাসাসহ শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান , সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৮৯ টি পুরস্কার তোলে দেন প্রধানঅতিথিসহ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ।
এদিকে রজত শুভ্র চক্রবর্তী শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় শনিবার বিকেলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি শামীম আক্তার হোসেন, সহ-সভাপতি চৌধুরী ভাস্কর হোম ও সাধারণ সম্পাদক বিকুল চক্রবর্তীসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
উল্লেখ্য, রজত শুভ্র চক্রবর্তী শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা পেশায়ও জড়িত রয়েছেন। তিনি ডেইলী ইন্ডাস্ট্রির শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
রজত শুভ্র চক্রবর্তী এর আগে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৬-এর শ্রীমঙ্গল উপজেলার কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ রোভারস্কাউট শিক্ষক হিসেবেও নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৮ এর শ্রীমঙ্গল উপজেলার কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে মৌলভীবাজার জেলাতেও শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হন। প্রায় পঁচিশ বছরের কলেজ শিক্ষকতা জীবনে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা , দেশি-বিদেশি পত্রিকায় বিভিন্ন প্রবন্ধ , গল্প, কবিতা লিখে যাচ্ছেন। তাছাড়াও একজন নাট্যকর্মী হিসেবে মঞ্চ ও টেলিভিশনে নাটকে অভিনয় করে যাচ্ছেন। তিনি “দেশ থিয়েটার শ্রীমঙ্গল” -এর সভাপতি, শ্রীমঙ্গল সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি “শ্রীমঙ্গল মৌচাক সাহিত্য পরিষদ”-এর সভাপতি এবং “শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব”-এর যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০ খ্রিস্টাব্দে সমাজের নানা অসঙ্গতি এবং সেসব থেকে উত্তরণের বার্তাবাহক হিসেবে রচিত তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ “প্রতিবিম্ব” প্রকাশিত হয়। কলেজ শিক্ষকতায় এবং নানা প্রশিক্ষণে উনার রয়েছে উল্লেখ করার মতো কৃতিত্ব। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে কলেজ শিক্ষকদের চল্লিশ দিন ব্যাপী চল্লিশতম ব্যাচের বিষয়ভিত্তিক ( যুক্তিবিদ্যা ) প্রশিক্ষণে কুমিল্লার কোটবাড়িতে হাইয়ার সেকেন্ডারি টিচার্স ট্রেণিং ইন্সটিটিউট ( এইচ.এস.টি.টি.আই )- এর সিলেট এবং চট্টগ্রাম বিভাগের প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে তিনি একাধিকবার কলেজ শিক্ষকদের এই প্রশিক্ষণে রিসোর্স পার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ খ্রিস্টাব্দেও তিনি ঢাকার ন্যাশনাল একাডেমি ফর এডুকেশন্যাল ম্যানেজমেন্ট ( নায়েম ) এর কলেজ শিক্ষকদের জন্য দশম ব্যাচের কম্পিউটার বিষয়ক প্রশিক্ষণে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে অংশ্রগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। বিভিন্ন যুগোপযোগি প্রশিক্ষণ গ্রহনকারী এই শিক্ষক বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত এইচ.এস.সি প্রোগ্রামের দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজ শ্রীমঙ্গল স্টাডি সেন্টারের ( এস.সি কোড-৫৯৫ )সমন্বয়কারী এবং বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ( বিসাকে-২৮৬২ )বইপড়া কর্মসূচির সংগঠক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।